শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ছিলেন একাধারে শিক্ষাবিদ, লেখিকা, কথা সাহিত্যিক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী। একাত্তরের স্মৃতি কথা নিয়ে তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ “একাত্তরের দিনগুলি” দেশ জুড়ে পাঠক নন্দিত। জাহানারা ইমাম ও তাঁর ছেলে শহীদ রুমির স্মৃতি সংরক্ষণে এলিফ্যান্ট রোডে নিজ বাড়ীতে গড়ে তোলা হয়েছে শহীদ জননী জাহানার ইমাম স্মৃতি জাদুঘর। তরুন প্রজন্মকে মহীয়সী নারী জাহানারা ইমামমের বিভিন্ন সংগ্রাম ও আত্নত্যাগের কথা জানানোর উদ্দ্যেশে জাহানারা ইমামের ছোট ছেলে সাইফ ইমাম জামি ২০০৭ সালে সম্পূর্ন ব্যক্তিগত উদ্যোগে জাদুঘরটি গড়ে তুলেন।

একটি বড় হল রুম ও অফিস কক্ষের সমন্বয়ে স্বল্প পরিসরে পরিপাটি করে গড়ে তোলা হয়েছে জাহানারা ইমাম জাদুঘরটি। ইমাম পরিবারের নানা স্মৃতি চিহ্ন ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র সর্ব সাধারনের প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে। জাদুঘরের এক দেয়ালে কিশোরী বয়স থেকে জীবনের শেষ পর্যন্ত শহীদ জাহানারা ইমামের মুখাবয়ের পরিবর্তিত বিভিন্ন ছবি স্থান পেয়েছে। শৈল্পিক মনের অধিকারিণী শহীদ জননীর সাহিত্য সম্ভারেরও পরিচয় পাওয়া যাবে এই জাদুঘরে।

জাহানারা ইমামের লেখা বইয়ের আলমারি দেখার পাশাপাশি মিউজিয়াম থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন বই কেনাও সুযোগ আছে। জাদুঘরের এক দেয়ালে জাহানারা ইমামের দাদা, বাবা ও নাতি সহ তিন প্রজন্মের ছবি রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য থাকা শহীদ জননীর ছেলে শফি ইমাম রুমির স্বাধীনতা অর্জনে অসামান্য অবদানের কথাও তুলে ধরা হয়েছে এই জাদুঘরে। শহীদ জননী ও রুমির আলোক চিত্রের পাশাপাশি তাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র ও আসবাপত্র, শৌখিন জিনিস, প্রাপ্ত বিভিন্ন সম্মাননা, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নথি পত্র, গন আন্দোলনের বিষয়ে নানা ছবি, পোষ্টার, বিভিন্ন বই, জাহানারা ইমাম ও রুমির লেখা বিভিন্ন চিঠি, ১৯৭১ সাল ও তাঁর পরবর্তী বিভিন্ন ডকুমেন্ট প্রদর্শিত করে রাখা আছে এখানে। এছাড়াও শহীদ রুমির নিজের মাকে নিয়ে করা বিভিন্ন উক্তি ও তাঁর বন্ধুদের রুমিকে উদ্দ্যশ্যে করে লেখা স্মৃতিচারনাও স্থান পেয়েছে এই জাদুঘরে।

সময়সূচী ও প্রবেশ মূল্য

প্রতি শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই জাদুঘর। তবে শীতকালে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় দিবসেও জাদুঘরটি উন্মুক্ত থাকে। জাদুঘরে বিনামুল্যে প্রবেশে করা যায়।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে বাস বা সিএনজিতে এলিফ্যান্ট রোডে পৌঁছে ৩৫৫ শহীদ জননী জাহানারা ইমাম সরণির কনিকা নামের বাসায় গেলেই জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘরে যেতে পারবেন।

ফিচার ইমেজ : সারাবাংলা ও সমকাল