সাতুরিয়া জমিদার বাড়ি
বরিশালের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ঝালকাঠি থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে রাজাপুর উপজেলায় বাংলার বাঘ হিসেবে পরিচিত এ কে এম ফজলুল হকের জন্মস্থান সাতুরিয়া জমিদার বাড়ি অবস্থিত। ১৭শ শতকে ফজলুল হকের মাতামহ শেখ শাহাবুদ্দিন সাতুরিয়ায় ১০০ একর জায়গার উপর এই জমিদার বাড়ী প্রতিষ্ঠা করেন। মুঘল স্থাপত্যে নির্মাণ করা জমিদার বাড়ীর কমপাউন্ডটি ৩টি ভবনের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। কমপাউন্ডে প্রবেশের জন্য রয়েছে কারুকার্য খচিত প্রধান ফটক। মূল বাড়ির ভিতরে ফুলের বাগান, পুকুর ও কারুকার্যখচিত মুঘল আমলের ভবনগুলো বাড়ীর সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছে।
১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর এই সাতুরিয়া জমিদার বাড়িতেই শেরেবাংলা একেএম ফজলুল হকের জন্ম হয়। সাতুরিয়া জমিদার বাড়ীর মক্তব থেকে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শুরু হয়। আর তাঁর কর্ম ও রাজনৈতিক জীবনের বেশীরভাগ সময় কেটেছে এই জমিদার বাড়িতে।
ঐতিহাসিক সাতুরিয়া জমিদার বাড়ি ইতিহাসের অনেক উজ্জ্বল ঘটনার সাক্ষী হিসেবে টিকে আছে। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে থাকা এই জমিদার বাড়ীতে শেরে বাংলা স্মৃতি পাঠাগারসহ কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণ হয়েছে।
কিভাবে যাবেন
উপকূলীয় ও নদী বহুল অঞ্চল হওয়ার কারণে ঝালকাঠি যাওয়ার জন্য নৌ পথ সবচেয়ে সুবিধাজনক। ঢাকার সদরঘাট থেকে সুন্দরবন ২, এম ভি ফারহান-৭, টি এস মাসুদ, টি এস অস্ট্রিচ, টি এস লেপচা ইত্যাদি লঞ্চ ও স্টিমারে রাজাপুর ঘাটে পৌঁছাতে পারবেন। ঢাকা হতে রাজাপুর পর্যন্ত লঞ্চের ভাড়া শ্রেণীভেদে ১৯০ থেকে ১,৬০০ টাকা। রাজাপুর ঘাটে নেমে যেকোন স্থানীয় পরিবহণে রাজাপুর-পিরোজপুর মহাসড়কের বেকুটিয়া ফেরিঘাটের কাছাকাছি অবস্থিত সাতুরিয়া জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন।
সড়কপথে ঢাকার সায়েদাবাদ বা গাবতলী থেকে বিআরটিসি, উত্তরণ, সুগন্ধা, হানিফ, ঈগল কিংবা সাকুরা পরিবহনে ফেরি পার হয়ে ঝালকাঠি পৌঁছে বাস বা সিএনজি নিয়ে রাজাপুর যেতে হবে। রাজাপুর থেকে রিকশায় সহজেই জমিদার বাড়ি যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
রাজাপুর উপজেলাতে সাধারন মানের কিছু হোটেল ও সরকারী ব্যবস্থাপনায় জেলা পরিষদ ডাকবাংলো আছে। তবে রাত্রিযাপনের জন্য সাতুরিয়া জমিদার বাড়ী ঘুরে সন্ধ্যার মধ্যে রাজাপুর থেকে ঝালকাঠি ফিরে আসাই ভালো। জেলা শহরে ধানসিঁড়ি রেস্ট হাউজ, হালিমা বোর্ডিং, আরাফাত বোর্ডিং, ডালিয়ান হোটেল, দিদার ইত্যাদি সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল আছে।
কোথায় খাবেন
ঝালকাঠির ষ্টেশন রোডে বেশকিছু রেস্তোরা আছে। আর সুযোগ পেলে অবশ্যই ঘোষ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মিষ্টি, রসমালাই এবং সকাল সন্ধ্যা সুইটসের লুচি ও মিষ্টি খেয়ে দেখবেন।
ঝালকাঠির অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
ফিচার ইমেজ: ড. এমদাদুল হক মামুনঝালকাঠির অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে গাবখান সেতু, সুজাবাদ কেল্লা, কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ী ও ভাসমান পেয়ারা বাজার উল্লেখযোগ্য।
No comments