জৈন্তা হিল রিসোর্ট
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার আলু বাগান নামক স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে জৈন্তা হিল রিসোর্ট (Jainta Hill’s Resort)। প্রকৃতির অপূর্ব নিস্বর্গ দেখার পাশাপাশি মেঘালয় পাহাড়ের জলপ্রপাত দেখার জন্য পর্যটকরা ছুটে আসেন এই পাহাড়ি অবকাশ কেন্দ্রে। তাই জৈন্তা হিল রিসোর্টে থাকা-খাওয়ার সুবিধার সাথে সাথে রয়েছে পাহাড়ের সৌন্দর্য্য অবলোকন করার ব্যবস্থা। পাহাড়, ঝর্ণা, নদী ও সুনীল আকাশ ছাড়াও জৈন্তা হিল রিসোর্ট থেকে আরো চোখে পড়ে স্বচ্ছ পানির গভীর থেকে শ্রমিকদের পাথর তুলে আনার অসাধারণ দৃশ্য। রিসোর্টে না থাকতে চাইলে কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই স্বপ্নপুরী হতে।
জৈন্তিয়া হিল রিসোর্ট থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে জৈন্তা রাজবাড়ি এবং ৫ কিলোমিটার দূরত্বে জাফলংয়ের অবস্থান। এছাড়া জৈন্তা হিল রিসোর্ট থেকে ১ কিলোমিটার দূরে তামাবিল স্থল বন্দর।
খরচ
জৈন্তা হিল রিসোর্টে থাকার বেশ ভাল ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে ২৫০০ থেকে ৫০০০ টাকায় এসি-নন এসি রুম ও কটেজে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।
যোগাযোগের ঠিকানা:
আলু বাগান, জৈন্তাপুর,
জাফলং রোড, সিলেট – ৩১৫৬
মোবাইল: 01711-739183
কিভাবে যাবেন
জৈন্তা হিল রিসোর্ট যেতে আপনাকে আসতে হবে চায়ের দেশ সিলেটে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা যায়। ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন ও আকাশপথে সিলেট যেতে পারবেন।
ঢাকা থেকে সিলেট
ঢাকার ফকিরাপুল, গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালি ও আবদুল্লাপুর বাস টার্মিনাল থেকে সিলেটের বাস ছেড়ে যায়৷ গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, শ্যামলি ও এনা পরিবহনের এসি বাস যাতায়াত করে, এগুলোর ভাড়া সাধারণত ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে। এছাড়াও ঢাকা থেকে সিলেট যেতে শ্যামলী, হানিফ, ইউনিক, এনা পরিবহনের নন এসি বাস জনপ্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়ায় পাবেন। সকাল, দপুর কিংবা রাত সব সময়ই বাস ছেড়ে যায়। ঢাকা থেকে সিলেট এর দূরত্ব ২৪০কিলোমিটার, সিলেট পৌঁছাতে সাধারণত লাগে ৬ ঘন্টার মত।
ঢাকা থেকে ট্রেনে করে সিলেট যেতে কমলাপুর কিংবা বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশান হতে উপবন, জয়ন্তিকা, পারাবত অথবা কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনকে বেছে নিতে পারেন আপনার ভ্রমণ সঙ্গী হিসাবে। শ্রেণী ভেদে জনপ্রতি ট্রেনে যেতে ভাড়া ২৮০ থেকে ১২০০ টাকা। ট্রেনে সিলেট যেতে সময় লাগে ৭-৮ ঘন্টা।
ঢাকা থেকে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে ও সাচ্ছন্দে যেতে আকাশ পথকে বেছে নিতে পারেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ, রিজেন্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান প্রতিদিন সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ক্লাস অনুযায়ী ভাড়া সাধারণত ৩০০০-১০,০০০ টাকা এর মধ্যে হয়ে থাকে।
চট্রগ্রাম থেকে সিলেট
চট্রগ্রাম থেকে গ্রীন লাইন, এনা, সৌদিয়া সহ অন্যান্য আরও অনেক বাস সিলেট যায়। এসি ও নন এসি এসব বাসের ভাড়া ৭০০-২০০০ টাকা। চট্টগ্রাম থেকেও ট্রেনে সিলেট যেতে পারবেন, পাহাড়িকা এবং উদয়ন এক্সপ্রেস নামের দুটি ট্রেন সপ্তাহে ৬ দিন চলাচল করে। ট্রেন ভাড়া ক্লাস অনুযায়ী ২৫০ থেকে ১১০০ টাকা।
সিলেট থেকে জৈন্তা হিল রিসোর্ট
সিলেটে যেকোন স্থান থেকে জাফলংগামী অটোরিকশা বা সিএনজি ভাড়া করে জৈন্তা হিল রিসোর্ট যেতে পারবেন। লোকাল বাসে করে শিবগঞ্জ এসে জনপ্রতি ৮০ টাকা ভাড়ায় জৈন্তা হিল রিসোর্টে যাওয়া যায়। সিএনজি বা অটোরিকশায় যেতে ভাড়া লাগে ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা। মাইক্রোবাস যাওয়া-আসা সহ সারাদিনের জন্যে রিজার্ভ নিলে ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকা ভাড়া লাগবে। দলগত ভাবে গেলে মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে গেলেই ভালো, তাহলে আশেপাশের অন্যান্য যায়গা নেমে ঘুরে দেখতে পারবেন। গাড়ি ঠিক করার সময় চালকের সাথে ভাল মত দরদাম করে নিন এবং কি কি দেখতে চান সে সম্পর্কে জানিয়ে রাখুন।
কোথায় থাকবেন
জৈন্তা হিল রিসোর্টে থাকতে না চাইলে চলে যেতে পারেন জাফলংস্থ জেলা পরিষদের বাংলোয়। অবশ্য এই বাংলোতে থাকতে হলে আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। সাধারণত পর্যটকরা রাতে থাকার জন্য সিলেটেই ফিরে আসেন। লালা বাজার এলাকায় ও দরগা রোডে কম ভাড়ায় অনেক মানসম্মত রেস্ট হাউস আছে৷ যেখানে ৪০০ থেকে ২৫০০ টাকায় বিভিন্ন ধরণের রুম পাবেন। এছাড়াও হোটেল হিল টাউন, গুলশান, দরগা গেইট, সুরমা,কায়কোবাদ ইত্যাদি হোটেলে আপনার প্রয়োজন ও সামর্থ অনুযায়ী থাকতে পারবেন।
কি খাবেন
জৈন্তা হিল রিসোর্টে প্রায় সকল ধরনের বাংলা খাবার পাওয়া যায়। জৈন্তা হিল রিসোর্টে খাবার না খেতে চাইলে সিলেটের জিন্দাবাজার এলাকার পানসী, পাঁচ ভাই কিংবা পালকি রেস্টুরেন্টের সুলভ মূল্যে পছন্দমত দেশী খাবার খেতে পারবেন।
জৈন্তা হিল রিসোর্টের সুযোগ-সুবিধাসমূহ
* সার্বক্ষনিক টেলিফোনের ব্যবস্থা
* ২৪ ঘন্টা রুম সার্ভিস
* সার্বক্ষনিক সিকিউরিটির ব্যবস্থা
* সুপরিসর রেস্টুরেন্ট
* গিফট শপ
* নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা
* কার পার্কিং
* নামাজের ব্যবস্থা
* রেন্ট এ কার
* ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে সহায়তা
জৈন্তিয়া হিল রিসোর্টের কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান
- জাফলং
- লালাখাল
- তামাবিল
- জৈন্তাপুর রাজবাড়ি
- সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা
No comments