ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী
গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরে অবস্থিত ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী (Bhawal Raj Shamshanswari) বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। জমিদার পরিবারের সদস্যদের শবদাহ সৎকারের উদ্দেশ্যে ভাওয়াল রাজবাড়ি থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে চিলাই নদীর দক্ষিণ তীরে প্রায় ৫ একর জায়গাজুড়ে ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী নামের এই সমাধিসৌধটি স্থাপন করা হয়। পরিবারের মৃত সদস্যদের নামে নামফলক ও সৌধ এছাড়াও শ্মশান চত্বরে মোগল স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত ৬ স্তম্ভবিশিষ্ট একটি শিবমন্দির রয়েছে।
বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্রমতে, মুন্সীগঞ্জ জেলার বজ্রযোগিনী গ্রামে ভাওয়াল জমিদারদের পূর্বপুরুষেরা বাস করতেন। ১৮ শতকের চল্লিশ দশকে বলরাম রায় তৎকালীন গাজীপুরের ভাওয়াল পরগনার জমিদার দৌলত গাজীর দেওয়ান হিসেবে কাজ করতেন। পরবর্তীতে দৌলত গাজীর জমিদারি বলরাম রায় নিলামে কিনে নেন। ১৭৪৩ সালে বলরাম রায়ের মৃত্যুর পর তার পুত্র কৃষ্ণরায় জমিদারি পরিচালনা শুরু করেন এবং ভাওয়াল জমিদারি স্থায়ীত্ব লাভ করে। ১৭৫০ সালে কৃষ্ণ রায়ের মৃত্যুর পর তার পুত্র জয়দেব রায় ভাওয়াল জমিদারি দায়িত্ব লাভ করেন। জমিদার জয়দেব রায়ের নামানুসারে ভাওয়াল এলাকা জয়দেবপুর নামে পরিচয় লাভ করে।
১৮৫৬ সালে কালী নারায়ণ রায় বংশানুক্রমে জমিদারির দায়িত্ব পান। জমিদারি পরিচালনার জন্য ব্রিটিশ সরকার তাঁকে রায় চৌধুরী এবং রাজা উপাধিতে ভূষিত করেন। কালী নারায়ণের শাসনামলে ভাওয়াল রাজবাড়ী এবং ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী নির্মাণ করা হয়। প্রচলিত আছে, ভারতের বিখ্যাত স্থপতি কামাক্ষ্যা রায় এই শ্মশানেশ্বরীর নকশা করেন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে গাজীপুরগামী বাসে শিববাড়ী পৌঁছে রিকশায় চড়ে ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
ঢাকার
কাছে হওয়ায় দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসা যায়। রাত্রিযাপনের জন্য গাজীপুরে
অসংখ্য রিসোর্ট ও আবাসিক হোটেল রয়েছে। গাজীপুরের অবস্থিত উল্লেখযোগ্য
রিসোর্টের মধ্যে ভাওয়াল রিসোর্ট, নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট, ছুটি রিসোর্ট, জল ও
জঙ্গলের কাব্য, অঙ্গনা রিসোর্ট, দ্যা বেস ক্যাম্প বাংলাদেশ, সারাহ রিসোর্ট
প্রভৃতি অন্যতম।
ফিচার ইমেজ: নাহিদ আল হাসান
No comments