সিলেট শাহী ঈদগাহ

বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে সিলেট শাহী ঈদগাহ (Sylhet Shahi Eidgah) অন্যতম। নিপুণ কারুকার্যময় শাহী ঈদগাহটি ১৭০০ সালের দিকে মোগল ফৌজদার ফরহাদ খাঁ নির্মাণ করেন। ২২ টি সিঁড়ি মাড়িয়ে ১৫ টি গম্বুজ সজ্জিত শাহী ঈদগাহের মূল চত্বরে প্রবেশ করতে হয়। সীমানা প্রাচীরের ঘেরা ঈদগাহের চারদিকে ছোট বড় ১০টি গেইট রয়েছে। এই ঈদগায়ে প্রায় দেড় লাখ মুসল্লী একত্রে ঈদের নাযাজ আদায় করতে পারেন। শাহী ঈদগাহের উত্তর দিকে একটি মসজিদ আছে, যা শাহী ঈদগাহ মসজিদ নামে পরিচিত। আর মসজিদের পাশে সুউচ্চ টিলার উপর রয়েছে বন কর্মকর্তার বাংলো। ঈদগাহের সামনে অবস্থিত বিশাল পুকুরে মুসল্লিরা অজুর করে থাকেন। এছাড়া দক্ষিণ দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিলেট কেন্দ্র এবং পূর্ব দিকে হযরত শাহজালাল (র.) এর সফরসঙ্গী শাহ মিরারজী (র.) এর মাজার ও সিলেট আবহাওয়া অফিস রয়েছে।

বর্তমানে শাহী ঈদগাহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহের সাক্ষী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। ১৭৮২ খ্রীষ্টাব্দে এই শাহী ঈদগাহে সৈয়দ মোহাম্মদ হাদী ও সৈয়দ মোহাম্মদ মেহেদী দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে ইংরেজ বিরোধী অভ্যুত্থানের সূচনা হয়। এছাড়াও এখানে মহাত্মা গান্ধী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের সহ অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেতাদের আগমনের ঘটনা রয়েছে। কারণ অতীতে সিলেটে সকল ধরনের বড় জন সমাবেশের জন্য শাহী ঈদগাহকে বেছে নেয়া হত।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার ফকিরাপুল, গাবতলি, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পরিবহণের বাস ছেড়ে যায়। তাদের মধ্যে এনা, গ্রিন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, শ্যামলী, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব পরিবহণের এসি/নন-এসি প্রতিটি আসনের ভাড়া ৫৫০ থেকে ১৪০০ টাকা। এছাড়া কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর পারাবত, জয়ন্তিকা, কালনি কিংবা উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়েও সিলেট যাওয়া যায়। ট্রেনে চড়ে সিলেট যেতে ৭-৮ ঘন্টা সময় লাগে।

সিলেট শহরের যেকোন প্রান্ত থেকে রিকশা বা সিএনজিতে চড়ে দক্ষিণ চত্বরে অবস্থিত সিলেট শাহী ঈদগাহ যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

কদমতলী ও দরগা রোডে কম ভাড়ায় অনেক মানসম্মত আবাসিক হোটেল আছে৷ যেখানে ৪০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিভিন্ন ধরণের রুম পাওয়া যায়। মাঝারি মানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল হিল টাউন, গুলশান, দরগা গেইট, সুরমা, কায়কোবাদ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

কোথায় খাবেন

সিলেটর জিন্দাবাজার এলাকার পানসী, পাঁচ ভাই এবং পালকি রেস্টুরেন্টে কম খরচে বিভিন্ন দেশীয় পদের খাবার পাওয়া যায়। এছাড়া সিলেট শহরের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট থেকে অনায়াসে পছন্দ মত খাবার খেতে পারবেন।

সিলেট জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

সিলেট জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে হযরত শাহজালালের মাজার, হযরত শাহপরাণের মাজার, ক্বীন ব্রীজ, মালনীছড়া চা বাগান, জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, লোভাছড়া, লালাখাল, পান্থুমাই ঝর্ণা, সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা, হাকালুকি হাওর, ভোলাগঞ্জ, ড্রিমল্যান্ড পার্ক এবং জাকারিয়া সিটি।

No comments

Translate

Powered by Blogger.